মনির হোসেন জীবন : গাজীপুরের টঙ্গীতে ডেসকোর প্রিপেইড মিটার থেকে অতিরিক্ত টাকা কর্তন (কেটে) নেয়ার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটারে দ্বিগুণ, তিনগুণ পর্যন্ত টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে। প্রিপেইড মিটারে টাকা রিচার্জ করতে করতে গ্রাহকরা এখন অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গ্রাহকরা বলছেন, টঙ্গীতে প্রায় গত দু’মাস ধরে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়ছে। স্বাভাবিকের চাইতে মাত্রাতিরিক্ত টাকা কেটে নিচ্ছে প্রিপেইড মিটারগুলো। টাকা ভরতেই মুহুত্বের মধ্যেই নাই হয়ে যাচ্ছে।
স্হানীয় ডেসকো অফিসে গ্রাহকরা প্রিপেইড মিটারে বিদ্যুৎ বিল বেশি কাটার অভিযোগ নিয়ে আসলে বিদ্যুতের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বলছেন, প্রিপেইড মিটারে বিদ্যুৎ বিল ঠিকঠাক মতোই কাটছে। কোন গন্ডগোল নাই। আসল ঘটনা খুঁজে বের করে আসলে কোন ঘটনায় বা কারনে এমনভাবে মিটারের টাকা কেটে যাচ্ছে এর একটা বিহিত ব্যবস্হা চেয়েছেন ডেসকোর টঙ্গীর হাজার হাজার গ্রাহক।
জানা গেছে, প্রতিদিন গ্রাহকরা মিটারে বেশি টাকা কেটে নেওয়ার এমন অভিযোগ করলেও গ্রাহকরা এর কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। গ্রাহকরা কার কাছে যাবেন এমন প্রশ্ন এখন সবার। এমতাবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট একটা বিহিত সুরাহা চেয়েছেন গ্রাহকরা। অহেতুক ভাবে বিদ্যুৎ বিল বেশি কেটে নেয়ার অভিযোগ একজন আর দু’জনের নয়, টঙ্গীর শত শত বিদ্যুৎ গ্রাহকদের। টাকা বেশি কেটে নেয়ার গাপলা কোথায় তা খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। গ্রাহকদের অনেকে বলছেন, বিদ্যুৎ ব্যবহার এখন গলার কাটায় পরিনত হয়েছে। সকালে টাকা ভরলে রাতেই নাই।
এদিকে, সংবাদ পত্রে চাকরি করা রিয়াজ শাহী নামে এক গ্রাহক বলছেন, যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে “বাড়ি বেইচ্চা বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে।” এমনিভাবে ছাত্র নেতা কানন মোল্লা বলছেন, মানুষকে চুষে খাওয়ার আরেক বস্তু বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার। আগে মাসে খরচ হতো ৭/৮ হাজার টাকা, এখন ১৫/১৮ হাজার টাকা, ফালতু সিষ্টেম। পুলিশ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেছেন, একটি ছোট ফ্লাটে ৩ দিনে হাজার টাকা নাই। কামরুল হাসানের বক্তব্য, প্রিপেইড মিটার হলো “হিরক রাজার আজব মেশিন।”
আলী আফজাল খান নামক এক গ্রাহক জানান, এটা নিশ্চয় জুলুমের মধ্যে পড়ে। “যারা প্রিপেইড মিটারের নিয়ন্ত্রণ করছে তারা আমাদের সাথে বেঈমানী করছে।” ব্যবসায়ী মঙ্গল মিয়া বলছেন, “যে কয় টাকা ঘর ভাড়া পাই অর্ধেক টাকা চলে যায় বিদ্যুৎ বিল দিতে।” “বিদ্যুৎ বিল দিতে দিতে আমি শেষ।” সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান টিটু বলছেন, “পিঠে বস্তা বেঁধে সহ্য করে নেয়া ছাড়া উপায় নেই।”
অপরদিকে, রাজনীতিবিদ জাকির হাসান খোকন বলছেন, “মনে হয় মৃত্যু ফাঁদ।” সাবেক টঙ্গী পৌরসভার কমিশনার আবুল হোসেন সিবো বলছেন, “পালাই পালাই অবস্থা “। “গলার কাটা”। টঙ্গী হজ কাফেলার মুয়াল্লিম আয়ুব আলী বলছেন, “জীবন শেষ করে দিল প্রিপেইড মিটার। নাজমুল হুদা বলছেন, “নিজের খাওয়া খরচের চাইতে বিদ্যুৎ বিলে বেশি খরচ হচ্ছে।” সাংবাদিক রিপন আনসারী বলছেন, “আমি অসুস্থ হয়ে গেছি “। ডেসকো একটি রাক্ষসে প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। এমনিভাবে নানা জনের বলা নানা কথার শেষ কথায় বিদ্যুৎ গ্রাহকরা প্রিপেইড মিটারে অস্বাভাবিক বিল কাটা বন্ধে দ্রুত সমাধান চেয়েছেন। কেন রিচার্জকৃত টাকা এমনভাবে কেটে যাচ্ছে গ্রাহকরা এর সঠিক ব্যাখ্যা চেয়েছেন ডেসকো কর্তৃপক্ষের কাছে।
এব্যাপারে টঙ্গির ডেসকো অফিসের এক কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী নয়নি।
এবিষয়ে পরিত্রাণ চেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মাননীয় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন টঙ্গি এলাকার ডেসকোর প্রিপেইড মিটারের হাজার হাজার গ্রাহক।
ছবিঃ টঙ্গীতে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটারে দ্বিগুণ টাকা কাটার অভিযোগ, দিশেহারা গ্রাহক