• ১৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১২ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

নারী ক্রীড়াবিদকে জোরপূর্বক ধর্ষন, ভিডিও ধারণ ও হুমকীর অভিযোগে জুজুৎসু এ্যাসোসিয়শনের সাধারণ সম্পাদক নিউটনসহ আটক-২

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত মে ১৮, ২০২৪
নারী ক্রীড়াবিদকে জোরপূর্বক ধর্ষন, ভিডিও ধারণ ও হুমকীর অভিযোগে জুজুৎসু এ্যাসোসিয়শনের সাধারণ সম্পাদক নিউটনসহ আটক-২

বিশেষ প্রতিনিধি : একজন নারী ক্রীড়াবিদকে জোরপূর্বক ধর্ষন, ধর্ষনের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামী নিউটন সহ ২ জনকে আটক করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

আজ দুপুরের দিকে র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র‌্যাব-১২ এর একটি দল রাজধানীর শাহ আলী ও মিরপুর মডেল থানা এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।

আটক প্রধান আসামী হলো বাংলাদেশ জুজুৎসু এ্যাসোসিয়শনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম ওরফে নিউটন (৬৫)। এছাড়া তার সহযোগী একজন নারী খেলোয়াড়কে ও আটক করা হয়েছে।

আটক নিউটন রাজধানীর পল্লবী থানার মৃত রজব আলীর পুত্র।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং’র পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম এসব তথ্য জানান।

এসময় র‌্যাবের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্হিত ছিলেন।

র‌্যাব সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি সময়ে জুজুৎসু এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ওরফে নিউটন’র বিরুদ্ধে এসোসিয়েশনের নারী ক্রীড়াবিদের যৌন হয়রানীসহ বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে একটি অনুসন্ধানি প্রতিবেদন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে জুজুৎসু এসোসিয়েশনের একজন নারী খেলোয়াড় রফিকুল ইসলাম’র বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১৮ মে নারী শিশু নির্যাতন দমন ও পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তি ধর্ষণের সাথে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত রফিকুল ইসলাম ওরফে নিউটন একজন জুজুৎসু খেলার প্রশিক্ষক। পাশাপাশি সে রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ জুজুৎসু এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। ওই এসোসিয়শনের অধিকাংশ প্রশিক্ষণার্থী নারী। যেখানে অভিভাবক হিসেবে এই কোমলমতি মেয়েদেরকে এগিযে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল। কিন্তু সেই ব্যক্তি কোমলমতি মেয়েদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তার হীন চরিত্র চরিতার্থ করার প্রয়াস চালায়।

কমান্ডার আরাফাত ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত রফিকুল এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদকের মত পদে থেকে প্রশিক্ষণার্থীদের ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়া এবং বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের মতো অপকর্ম করতো বলে জানা যায়। এছাড়াও সে এসোসিয়েশনের অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে খেলোয়ারদের সাথে অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে গর্ভবতী হলে তাদের গর্ভপাত করানোর মতো ভয়ংকর কাজও করেছে বলে জানা যায়। এমনকি সে অনুশীলনের আগে মেয়েদের পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে প্রবেশ করে তাদের জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ ও নগ্ন ছবি তুলে রাখতো। পরবর্তীতে ধারণকৃত নগ্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় ভীতি দেখিয়ে ব্যাকমেইল করে বারংবার ধর্ষণ করে তার হীন চরিত্র চরিতার্থ করতো বলে জানা যায়।

মামলার এজাহার সূত্রের বরাত দিয়ে
র‌্যাব জানান, গ্রেফতারকৃত রফিক এসোসিয়েশনের অপর এক নারী খেলোয়াড়ের সহায়তায় অন্য নারী খেলোয়াড়দের মিথ্যা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে যৌন হয়রানি সহ জোর পূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করতো। ভিকটিম বিগত ২ বছর যাবত ওই জুজুৎসু এসোসিয়েশনে গ্রেফতারকৃত রফিক এর অধীনে জুজুৎসু খেলার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আসছিল। খেলার প্রশিক্ষণকালীন সময়ে রফিক বিভিন্ন অজুহাতে ভিকটিমকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করতো। পরবর্তীতে ভিকটিম প্র্যাকটিস শেষে চেঞ্জিং রুমে পোষাক পরিবর্তন করার সময় গ্রেফতারকৃত নারী খেলোয়াড় ভিকটিমকে রুমের মধ্যে আটকে রেখে রফিকুল ইসলামকে ডেকে আনে এবং গ্রেফতারকৃত রফিকুল রুমে প্রবেশ করে ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত নারী খেলোয়াড় রুমে প্রবেশ করে মোবাইল ফোনে ভিকটিমের নগ্ন ছবি ধারণ করে এবং কাউকে জানালে ভিকটিমের নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করে।

তিনি আরও জানান, ওই ঘটনার পর গ্রেফতারকৃত রফিকুল ইসলাম ভিকটিমের নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে রাজধানীর একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে বলে জানায়। ওই ঘটনায় ভিকটিম মামলায় দায়ের করলে গ্রেফতারকৃতরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপন করে এবং আত্মগোপনে থাকাকালীন অবস্থায় র‌্যাব তাদের গ্রেফতার করে।

মামলার এজাহার নামীয় ২নং আসামি গ্রেফতারকৃত অপর নারী খেলোয়াড়কে ইতোমধ্যে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

October 2024
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031