এসময় এটিইউ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্হিত ছিলেন।
এসপি সানোয়ার হোসেন প্রেসব্রিফিংয়ে জানান, এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)’র একটি দল নিজস্ব গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড় ১০ টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানার স্টেশন রোড এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার বরপা জঙ্গি আস্তানার প্রধান ও রূপগঞ্জ থানায় গত ৩ জুলাই, ২০২৪ সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলায় এজাহারনামীয় ১ নং পলাতক আসামী মোঃ জাবেদ হোসেনকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরো জানান, ইতিপূর্বে, ২০২৪ সালের ৯ জুন নেত্রকোনা মডেল থানার ৭ নং কাইলাটি ইউনিয়নের বাসাপাড়া গ্রামের স্থানীয় একটি খামারবাড়ি ভাড়া নিয়ে মৎস্য খামার পরিচালনার অন্তরালে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র একটি বড় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ধান পায় এটিইউ। এটিইউ’র বোম্ব ডিসপোজাল টিম ও সোয়াট টিম সেখানে অভিযান পরিচালনা করে আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগজিন ও তাজা গুলি, ওয়াকিটকি সেট, হাতকড়া, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোনসহ উগ্রবাদী প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদান ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে। এ সংক্রান্তে নেত্রকোনা মডেল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় গত ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে কক্সবাজার সদর থানা এলাকায় ঝটিকা অভিযান চালিয়ে ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নারী সমন্বয়কারী পারভীন আক্তার (২৪) কে গ্রেফতার করে এটিইউ পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত পারভীন এটিইউ’র নিকট স্বীকার করে জানান, তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার বরপা এলাকার একটি বাসায় জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালিত হয় মর্মে তথ্য প্রদান করেন। পরবর্তীতে এমন প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এটিইউ’র একটি চৌকস দল গোয়েন্দা নজরদারী ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার বরপা এলাকার একটি ভাড়া বাসা সনাক্ত করে। এটিইউ’র বোম্ব ডিসপোজাল টিম ও সোয়াট টিম আসামী মোঃ জাবেদ হোসেনের বর্তমান বরপা এলাকার ভাড়া বাসাটিতে অভিযান পরিচালনা করে ৩ টি তাজা আইইডি (বোমা), বোমা তৈরীর বিভিন্ন উপাদান ও সরঞ্জামাদিসহ ছোরা, চাপাতি, ডায়রী, মোবাইল ফোন ও সীমকার্ড উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় পলাতক মোঃ জাবেদ হোসেনসহ তার অপর পলাতক সহযোগীদের আসামী করে রুপগঞ্জ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।
এটিইউ পুলিশের এ কর্মকর্তা আরো জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ জাবেদ হোসেন তার অপরাপর পলাতক সহযোগীদের সহায়তায় নেত্রকোনায় ‘আনসার আল ইসলাম’র প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বোমা তৈরীতে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এছাড়া অভিজ্ঞতার কারনে তিনি তার নিজ ভাড়া বাসায় বোমা তৈরী করে আসছিলেন। তার সহযোগীরা ওই বোমা ব্যবহার করে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে প্রস্ততি গ্রহণ করে আসছিল বলে স্বীকার করেছে। বরপা এলাকাস্থ আসামী জঙ্গি জাবেদ তার ভাড়া বাসায় সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে অবস্থান করতেন এবং গোপন বৈঠকসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তারা একটি নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রথম শ্রেনীর সদস্য হওয়ায় তাদের স্ত্রীরাও তাদের কাজের সাথে সম্পৃক্ত।
তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা রয়েছে।