মনির হোসেন জীবন: রাজধানীর খিলখেত থানা এলাকায় দৈনিক বণিক বার্তার বিজ্ঞাপন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীরকে নৃশংসভাবে খুন ও ঘুমের মামলায় মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত প্রধান আসামি ফয়সাল পেডিকে তুরাগ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গতকাল সোমবার আনুমানিক সন্ধ্যা সোয়া ৬ টার দিকে রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকায় গোপনে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব বলছে, আটককৃত আসামীর নাম এ এম এম ফয়সাল ওরফে পেডি (৩১)। মেহেরপুর জেলার গাংনী থানাী মৃত মাহতাব উদ্দিনের পুত্র।
দৈনিক বণিক বার্তার বিজ্ঞাপন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম কাওছার (৩৮)’কে নৃশংসভাবে হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত সহ মোট ২ টি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল পেডি। ঘটনার পর থেকে সে আত্নগোপনে চলে যায় এবং দীর্ঘ ৯ বছর পলাতক থাকার পর গতকাল সোমবার তাকে আটক করা হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-২ এর সিনিয়র এএসপি এবং সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) শিহাব করিম এসব তথ্য জানান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম মোঃ জাহাঙ্গীর আলম কাউছার (৩৮) বনিক বার্তা পত্রিকার বিজ্ঞাপন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর ইং তারিখে প্রতিদিনের ন্যায় সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে বাসা থেকে মোটর বাইক যোগে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হন। অফিসের কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার সময় হলেও ভিকটিমের বাসায় আসতে দেরী দেখে তার স্ত্রী তার স্বামীর মোবাইলে কল করলে ফোন বন্ধ পাওয়ায় তার অফিসসহ আত্মীয় স্বজনদের বাসায় যোগাযোগ করেন। কোথাও ভিকটিমের সন্ধান না পাওয়ায় ভিকটিমের স্ত্রী তেজগাঁও থানায় এরপর দিন একটি নিখোঁজ ডায়েরী (জিডি) করেন । পরবর্তীতে ঘটনার তিন দিন পর ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইং সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে লোক মারফত জানতে পারেন, খিলক্ষেত থানার নামাপাড়া বোডঘাট এলাকায় ৩৫/৩৬ বছর বয়সের একজন অজ্ঞাতনামা পুরুষ মানুষের লাশ একটি বাড়ীর ৫ম তলায় লাগেজের মধ্যে রয়েছে। ভিকটিমের স্ত্রী খিলক্ষেত থানা পুলিশের সহায়তায় ওই স্থানে বাড়ীটির ৫ম তলায় ফ্লাটের রুমের ভিতর লাগেজ থেকে গলায় বৈদ্যুতিক তার প্যাঁচানো ও চোখ গামছা দিয়ে বাঁধা, সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তার স্বামীর লাশ সনাক্ত করে। এ ঘটনায় নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী খিলক্ষেত থানায় এ এম এম ফয়সাল ওরফে পেডি (৩১)’কে প্রধান আসামি ও ৩/৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে খিলক্ষেত থানায় পেনাল কোড আইনে
একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে আসামি পলাতক ছিলেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার তদন্ত শেষে এ এম এম ফয়সাল পেডির বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন। বিজ্ঞ আদালত বিচারকার্য শেষে আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ড সাজা প্রদান পূর্বক পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করেন। গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর থেকে আসামি এ এম এম ফয়সাল ওরফে পেডি দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, ওই মামলা ছাড়াও আসামি ফয়সাল পেডির নামে দু’টি হত্যা মামলা এবং একটি বিস্ফোরক আইনের মামলার রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।